সুবংশে সুসন্তান সুধীজনে কয়, সুবীজে সুফলন জানবে নিশ্চয়। বীজ কৃষির প্রথম ও প্রধান আবশ্যকীয় উপকরণ। কৃষির আবশ্যকীয় যে কোনো উপাদানের অভাবে কৃষির মাত্রিক ফলন আসবেই। কিন্তু বীজ ব্যতিরেকে অন্যান্য সব উপাদান শতভাগ নিশ্চিত হলেও ১ গ্রাম ফলন আসবে না। সুতরাং বীজ ছাড়া কৃষি অকল্পনীয় মূল্যহীন। মানসম্মত বীজ হলেই কেবল কাক্সিক্ষত ফলন পাওয়ার আশা করা যায়। কৃষি প্রধান বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত সব বীজ মিলে সর্বোচ্চ ১০-১২% মানসম্মত বীজ (দুএকটি ফসলে ২০%) সরবরাহ দেয়া সম্ভব হয়েছে। হয়তো সে কারণে সোনামাখা মাটি থেকে উপযুক্ত আবহাওয়া পরিশ্রমী মানুষ থাকা সত্ত্বেও সর্বোচ্চ ফলন নিশ্চিত করা যায়নি। বগুড়ার মারিয়া গ্রামের কৃষক কিষাণীরা বীজভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিশ্রুতিশীল বীজ উৎপাদন বীজ সংরক্ষণ বীজ ব্যবসা চালু করে আজ বিশ্ব বাজারে নন্দিত।
বীজের অঙ্কুরোদগম পরীক্ষা: গবেষণাগারে কাঁচের পেট্রিডিশ এবং আরো অনেক সর্তকতা অবলম্বন করে বীজের অঙ্কুরোদগম পরীক্ষা করা হয়। অথচ বলতে গেলে বিনে খরচে লাগসই প্রযুক্তি অবলম্বণ করে আমরা অনায়াসে অঙ্কুরোদগম পরীক্ষা করতে পারি। এ ক্ষেত্রে মাটির পাত্র নিয়ে তার মধ্যে বালিমাটি পানির সাথে মিশিয়ে কাঁদা করে মাটির পাত্রে রাখতে হবে। এরপর ১শ’ বীজ বৃত্তাকারে ৩ সারিতে কাদামাটির উপরে রেখে দিতে হবে। ২-৫ দিন বা সর্বোচ্চ ৭ দিন পর গুণে দেখতে হবে মোট কতটি সুস্থ সবল চারা টিকে আছে। পরীক্ষায় কমপক্ষে শতকরা ৮০ ভাগ সুস্থ সবল চারা গজানো ক্ষমতাসম্পন্ন বীজকে মানসম্মত বীজ হিসেবে গণ্য করা যায়। তবে অঙ্কুরোদগমের হার যত বেশি হবে তত বেশি লাভ হবে ফলনে। বীজ অঙ্কুরোদগম পরীক্ষা মাটির পাত্র ছাড়াও কলাপাতা, কলার খোল, মোটা কাপড়, মোটা কাগজ এসব দিয়েও করা যায়। মোটকথা যা দিয়ে বা যেভাবেই করা হোক না কেন লক্ষ্য রাখতে হবে সাবধানতার সাথে বীজের অঙ্কুরোদগম পরীক্ষা করা এবং কমপক্ষে শতকরা ৮০ ভাগ গজানো ক্ষমতাসম্পন্ন বীজ সংগ্রহ করে বীজতলায় বপন করা।
বীজ বাছাই: বীজ বাছাই পদ্ধতি কৃষি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সাধারণভাবে প্রতিবিঘা জমির জন্য ৮ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। কিন্তু বাছাইকৃত মানসম্মত বীজ হলে মাত্র ৩ কেজি বীজ দিয়ে ১ বিঘা জমি অনায়াসে আবাদ করা যায়। বিঘাপ্রতি যদি ৫ কেজি বীজ সাশ্রয় করা যায় তাহলে আমরা হিসাব করতে পারি প্রতি বছর ৩ মৌসুমে শুধু ধানের ক্ষেত্রে কত হাজার মেট্রিকটন বীজ আমরা সাশ্রয় করতে পারি? সুতরাং মানসম্মত বাছাইকৃত বীজ কৃষি উৎপাদনে অভাবনীয় অবদান রাখতে পারে। খরচবিহীন বীজ বাছাইয়ের বেশ ক’টি পদ্ধতি অনুসরণযোগ্য। সেগুলোর মধ্যে আছে:-
হাত বাছাই: বীজের জন্য হাতবাছাই একটি সহজ এবং ভালো একটি পদ্ধতি। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বীজ নিয়ে টেবিল/কাগজ/কাপড়/কুলা/ডালা/পরিষ্কার ফ্লোরে বিছিয়ে কালো দাগযুক্ত/ভাঙা/বিজাত/অন্যান্য ফসলের বীজ, ঘাসের বীজ, পাথর কণা এসব বাছাই করে আলাদা করে নিতে হয়। বাছাইকৃত বীজগুলো পরবর্তীতে বপনের জন্য তৈরি করে রাখা যায়। মনে রাখতে হবে অনেক বীজ এক সাথে বাছাই করা যাবে না। এতে চোখ-শরীরের অসুবিধা হয়ে যাবে। আর একাকি করাও সম্ভব নয়। সেজন্য পরিবারের সব সদস্য মিলে সুযোগ-সুবিধা মতো দিনে রাতের যে কোনো সময়ে বীজ বাছাই করলে দেখা যাবে প্রয়োজনীয় পরিমাণ বীজ সহজেই বাছাই হয়ে গেছে। প্রয়োজনবোধে পরিবারের কিংবা বাড়ির বা প্রতিবেশী ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের দিয়ে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বীজ বাছাই কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। ১ কেজি বীজ হাতে বাছতেই সাধারণত ৩-৪ ঘণ্টা সময় লাগে। সেজন্য যৌথ দলীয়ভাবে বীজ বাছাই করলে সময় কম লাগে কষ্ট কম হয়। বাছাই ছাড়া বীজ বিঘা প্রতি ১৩-১৪ মণ ফলন হয়। আর বাছাইকৃত বীজ দিয়ে আবাদ করলে বিঘা প্রতি ২০-২২ মণ। অর্থাৎ বাছাইকৃত বীজ দিয়ে আবাদ করলে বিঘাপ্রতি অতিরিক্ত ৮-১০ মন ফলন পাওয়া যায়। একই খরচে একই সময়ে এ অতিরিক্ত সুবিধা বা লাভটুকু কেন আমরা গ্রহণ করবোনা।
পানি বাছাই: প্রয়োজনীয় পরিমাণ বীজ নিয়ে মাটির/সিলভার/পিতল/প্লাস্টিকের গামলা নিয়ে এমন পরিমাণ পরিষ্কার বিশুদ্ধ পানি নিতে হবে যেন সমুদয় বীজ পানিতে ডুবে থাকে। বীজ পানিতে ডুবিয়ে রাখার পর হাত বা কাঠি দিয়ে কতক্ষণ নাড়া দিলে সব চিটা অপুষ্ট বীজ পানির উপরে ভেসে উঠবে। তখন ছাকনি দিয়ে উপরের বীজ ফেলে দিয়ে নিচের জমে থাকা অংশ বীজের জন্য রেখে দিতে হবে এবং বীজ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এ সহজ সরল পদ্ধতিটি আমরা সহজেই অনুসরণ করতে পারি।
লবণ পানি বাছাই: পরীক্ষায় প্রমাণ পাওয়া গেছে, সাধারণ পানিতে বীজ বাছাই আর লবণ পানি বীজ বাছাই ভিন্ন। তাহলো বিশুদ্ধ পানিতে বাছাইকৃত বীজ লবণ পানিতে ডুবালে নতুন কিছু অপুষ্ট বীজ ভেসে ওঠে। অর্থাৎ লবণ পানিতে বাছাইকৃত বীজ সাধারণ পানিতে বাছাইকৃত বীজের চেয়ে বেশি বিশুদ্ধ বেশি মানসম্মত বেশি কার্যকর। সেজন্য লবণ পানিতে বাছাইকৃত বীজ ব্যবহার করা বেশি লাভজনক। পদ্ধতি হলে দু’ভাবে পানিতে লবণ মিশাতে হবে। পানিতে সে পরিমাণ লবণ মিশাতে হবে, যতক্ষণ একটি ডিম সোজা হয়ে পানির উপরে ভেসে উঠে। এ হিসাবে ১০ লিটার পানিতে ২ কেজি লবণ ভালোভাবে মিশিালেই চলবে এবং পরে পানিতে বীজ ছাড়তে হবে। কতক্ষণ নাড়াচাড়ার পর অপুষ্ট বীজ, চিটা পানির উপরে ভেসে উঠবে। ছাকনি দিয়ে উপরের বীজ ছেকে ফেলে নিচের বীজ মানসম্মত বিশুদ্ধ পুষ্টবীজ হিসেবে পাওয়া যাবে। নিচের বীজ সংগ্রহের পর লবণমুক্ত করার জন্য বিশুদ্ধ পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে বীজ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। এভাবে যতবার প্রয়োজন ততবার বীজ বাছাই করা যায়। তবে বীজ ডুবানোর আগে প্রতিবার ডিম দিয়ে পরীক্ষা করে অতিরিক্ত লবণ মিশিয়ে উপযুক্ত দ্রবণ তৈরি করে বাছাই কাজ শেষ করতে হবে। লবণ পানির কাজ শেষ হওয়ার পর পুরো লবণ মিশ্রিত পানি নারকেল গাছের গোড়ায় ঢেলে দিতে হবে। এতে নারকেল গাছের উপকার হবে। আর উপরে ভাসা বীজ হাঁস-মুরগির খাবার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। লবণ পদ্ধতির জন্য বাজারে খোলা সাধারণ লবণ ব্যবহার করলেই চলে।
বীজ শোধন: বীজ শোধন ফসল উৎপাদনের একটি সতর্কমূলক আবশ্যকীয় পদ্ধতি। আমাদের দেশে সাধারণভাবে উৎপাদিত বীজ থেকে বিভিন্ন ধরনের বালাই বীজের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। পরে এসব বালাই উপযুক্ত পরিবেশে বিস্তৃত হয়ে ফসলকে আক্রমণ করে, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। এ ক্ষতি ৩০-৩৫% থেকে ১০০% হয়। আধুনিক প্রযুক্তি বিস্তারের সাথে সাথে বীজ শোধনের প্রতি সচেতনতাও বেড়েছে। কিন্তু বীজ শোধন উপকরণের প্রাপ্যতা এবং মূল্যের কারণে অধিকাংশ চাষিরা বীজ শোধনে তেমন আগ্রহী হয়ে ওঠে না। কিন্তু বিষয়টি আবশ্যকীয় এবং অতি প্রয়োজনীয়। কিছু কিছু কৃষক ইদানীং বিভিন্ন লাগসই প্রযুক্তি/পদ্ধতি ব্যবহার করে বীজ শোধন করেন। এতে যথোপযুক্ত শতভাগ কাজ না হলেও বেশ কিছু কাজ হয়। এর মধ্যে লবণ পানি শোধন, ইউরিয়া পানি শোধন (১০ লিটার টানিতে ২ কেজি লবণ বা ইউরিয়া) সহজ সরল পদ্ধতির মধ্যে অন্যতম। বগুড়ার মারিয়া গ্রামে চাষিরা ভিন্ন এক পদ্ধতি অনুসরণ করেন। এক্ষেত্রে ১৫-২০টি জামপাতা নিয়ে একত্রে পিষে নিয়ে ম- করে ১ লিটার পানির সাথে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এরপর ১ কেজি বীজ জামপাতা মিশ্রণে ৩০ মিনিটে ডুবিয়ে তারপর ছেঁকে নিয়ে কলাপাতার মধ্যে রেখে অঙ্কুরোদগম করিয়ে বীজ তলায় বুনতে হবে। মোটকথা জামপাতার রস যেন বীজের গায়ে লেগে থাকে। পরীক্ষা/গবেষণায় দেখা গেছে, জামপাতার রসে এমন কিছু উপাদান আছে যা বীজের অঙ্কুরোদগম ত্বরান্বিত করে চারা/গাছ সবল হয় এবং বালাই প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ফলন বেশি হয়। এভাবে শোধন করলে আমাদের উৎপাদন ভা-ার আরো সমৃদ্ধ হবে।
বীজতলা শোধন: এ দেশের কৃষিতে সামান্য কিছু ফসল ছাড়া বাকি সব ফসলের জন্য বীজতলা আবশ্যকীয়। বীজতলায় চারা উৎপাদন করে পরে মূল জমিতে চারা রোপণ করা হয়। সেজন্য বীজতলা যদি যথাযথ ব্যবস্থাপনা না করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে চারা বা কলম কম হবে দূর্বল হবে। বীজ তলার ব্যবস্থাপনা যদি সুনিশ্চিত হয় তাহলে মূলজমির ফলন উৎপাদন কাক্সিক্ষত হারে হবে। মাঠের ফসলে আমাদের গোলা ভরবে। বীজতলা ব্যবস্থাপনার আছে অনেক পদ্ধতি। এর মধ্যে বীজতলা শোধন একটি। বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে বীজতলা শোধন করা হয়। তার কয়েকটি পদ্ধতি বর্ণনা করা হলো।
পলিথিন পদ্ধতি: জমিতে প্রথমে এক চাষ দিয়ে পানি দিয়ে জমি থকথকে করা। এরপর ভালোভাবে মোটাপলিথিন দিয়ে ২-৩ দিন বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে। পানি, তাপ এবং গুমোট পরিবেশে বীজতলার পোকামাকড় মরে যাবে এবং বীজতলা বালাইমুক্ত হবে। ৩-৪দিন পর পলিথিন খুলে ভালোভাবে চাষ করে যথাযথভাবে বীজতলা তৈরি করে বীজ বপন করতে হবে। এতে অনেক অপকারী বালাইয়ের আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা পাবে। দেশের শতভাগ কৃষক ইচ্ছে করলে এ খরচবিহীন কৌশলটি অনুসরণ বা বাস্তবায়ন করতে পারেন। এতে প্রতি বছর এ দেশটির হাজার কোটি টাকা বেঁচে যাবে।
ফরমালডিহাইড পদ্ধতি: পদ্ধতিটি খানিকটা আধুনিক এবং ব্যয় সম্পৃক্ত। প্রথমে বীজতলাতে প্রাথমিক চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুরা করতে হবে। এরপর বাজার থেকে ফরমালিন কিনে প্রতি ভাগ ফরমালিনের সাথে.... ভাগ পানি মিশিয়ে ফরমালডিহাইড মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। ফরমালডিহাইড মিশ্রণ স্পেয়ারের সাহায্যে ছিটিয়ে বীজতলার মাটি ভিজিয়ে দিতে হবে। ভালোভাবে মাটি ভেজার পর মোটা পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে দিতে হবে। এভাবে ৩-৫ দিন ঢেকে রাখার পর পলিথিন সরিয়ে উন্মুক্ত করে মাটি কুপিয়ে দিতে হবে। যত দিন পর্যন্ত ফরমালিনের গন্ধ থাকবে তত দিন পর্যন্ত বীজ বপন করা যাবে না। তা না হলে অঙ্কুরোদগম সমস্যা হবে। এ পদ্ধতিতে বীজতলা শোধন করে সব ধরনের বীজ বপন করা যায়। বিশেষ করে সবজি বীজতলা করার জন্য এ পদ্ধতি খুবই কার্যকর এবং ফলপ্রসূ। যদিও এ পদ্ধতি রাসায়নিক উপকরণ নির্ভর। কিন্তু খরচ হয় খুবই সামান্য। অথচ লাভ হয় অনেক বেশি। কেননা বীজতলায় যত ভালো সুস্থ নিরোগ চারা উৎপাদন করা যায় ভবিষ্যতে ফলনও তত বেশি হবে। অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, বীজতলায় নানাবিধ রোগ পোকার আক্রমণ হয়। এতে ফসল উৎপাদনে বেশ ক্ষতি হয়। ফরমালডিহাইড পদ্ধতিতে বীজতলা শোধন করলে এসব রোগ পোকা মাকড়ের আক্রমণ থেকে চারা অনেকাংশে রক্ষা পায়। কৃষকের ফলনও বেশি হয়।
বীজতলায় ছাই দেয়া: বীজতলায় ছাই দেয়া গ্রাম বাংলার কৃষির এক আবশ্যকীয় অংশ। আবহমানকাল থেকেই কৃষকরা ছাই ব্যবহার করে আসছে। সময়ের ব্যবধানে প্রমাণিত হয়েছে বীজতলায় ছাই দেয়ায় বহুমুখী উপকার আসে। প্রথমত ছাই দিলে বীজতলার উপরের মাটি নরম তুলতুলে থাকে। এতে চারার শিকড় বেশিদূর যায় না ফলে চারা তোলার সময় সহজে তোলা যায়, শিকড় নষ্ট কম হয়। কোনো চারা গাছের শিকড় নষ্ট যত কম হবে মূল জমিতে রোপণের পর চারা তত তাড়াতাড়ি চারা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। কম সময়ে বাড়বে এবং ফলন বেশি হবে। শুধু তা-ই না বীজতলায় ছাই দিলে জৈবসার যোগ হয়। পটাশের অভাব দূর হয়, পিঁপড়াসহ বিভিন্ন পোকামাকড় কম হয়। ধানের বীজতলায় বীজ বপনের ৩-৪ দিন পর ছাই দেয়া হয়। তবে কেউ কেউ বীজতলা তৈরির পর আগে ছাই দেন পরে বীজ বপন করেন। আবার কেউ কেউ বীজ বপনের পর ছাই ছিটিয়ে দেন। বীজতলায় ছাই ছিটালে বিভিন্ন পাখির উপদ্রব থেকে গজানো বীজ রক্ষা পায়। বিনেমূল্যে বা স্বল্পমূল্যে এ প্রযুক্তিটি আমরা সবাই বাস্তবায়ন করতে পারি।
শীতের অধিক ঠা-া থেকে বীজতলা রক্ষা: আমাদের দেশে প্রায় প্রতি বছর শীতকালে কোনো কোনো সময়ে বেশ ঠা-া পড়ে। এতে শুধু বীজতলার চারা গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয় না, মারাত্মক ক্ষতি হয়ে ফলন কমিয়ে দেয় বা নষ্ট করে দেয়। প্রাকৃতিক এ বিপর্যয় থেকে বীজতলা রক্ষা করার জন্য বীজতলার উপরে প্রথমে বাঁশের কঞ্চি বা চিকন রডের স্টিক দিয়ে স্ট্রাকচার তৈরি করতে হবে। এরপর প্রয়োজনীয় পরিমাণ মোটা পলিথিন দিয়ে সন্ধ্যার আগেই বীজতলা মাটি পর্যন্ত ভালোভাবে ঢেকে দিতে হবে। আবার সকাল বেলায় সূর্য ওঠার পর পলিথিন খুলে ফেলতে হবে। এভাবে যতদিন বেশি ঠা-া থাকবে ততদিন এভাবে রাতে বীজতলা ঢেকে দিতে হবে। এ পদ্ধতি অবলম্বন করলে কোল্ড ইনজুরি থেকে বীজতলার চারা রক্ষা করা যায়। কেউ কেউ হাল্কা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধানের বীজতলা ধুয়ে দেয় এতে বীজতলা বেশি ঠা-া থেকে রক্ষা পায়।
লাগসই পদ্ধতিতে বীজ সংরক্ষণ: ফসল উৎপাদনে বীজ যত মানসম্মত হয় ফলন ততবেশি হয়, তত ভালো হয়। ভালো মানসম্মত বীজ যতটুকু না উৎপাদন কৌশলের ওপর নির্ভর করে তার চেয়ে বেশি নির্ভর করে যথাযথ পদ্ধতিতে বীজ সংরক্ষণের ওপর। সাধারণভাবে লাগসই পদ্ধতিতে, আধুনিক পদ্ধতিতে বীজ সংরক্ষণ করা যায়। সাধারণ পদ্ধতিতে সংরক্ষিত বীজ মানসম্মত থাকে না। আধুনিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করলে খরচ বেশি হয়। সেজন্য কম খরচে মানসম্মত বীজ প্রাপ্তির নিশ্চয়তা পাওয়া যায় এমন পদ্ধতিই বিশ্লেষণ করা হবে। আমাদের দেশে সাধারণত মাটির পাত্রে বীজ সংরক্ষণ করা হয়। বিশেষ কিছু কৌশল আর পদ্ধতি অবলম্বন করলে সাধারণ পদ্ধতি অসাধারণ পদ্ধতিতে পরিণত হয়। বীজ মাটির পাত্রে, বোতলে, পটে, টিনে, ড্রামে, প্লাস্টিকের ড্রামে, বস্তায় সংরক্ষণ করা হয়। তবে বীজ পাত্রের পছন্দ নির্ভর করে বীজের পরিমাণ, জাতের ওপর। যেমনÑ শাকসবজির বীজ হলে বোতলে/পটে, ডাল তেল বীজের জন্য পট বা টিনে আর দানাদার বীজ হলে ড্রাম, মাটির পাত্র, পলিথিনের বস্তায় রাখা যায়। যে কোনো পাত্রেই রাখা হোক না কেন সাধারণ অনুসরণীয় কৌশল হলো বীজপাত্রের তলায় শুকনা/পরিষ্কার/ঠা-া বালি রেখে তার ওপর ১০-১২% আর্দ্রতা সম্পন্ন বীজ রাখতে হবে। বীজ পাত্রের ঠিক মাঝখানে ১/২ খ- শুকনা চুন রাখতে হয়। তারপর বীজ পাত্রের মুখ পর্যন্ত বীজ রেখে তার উপরে বিশকাটালী/নিম/নিসিন্দা/ল্যান্টানা/তামাকের শুকনা পাতার গুঁড়া মুখে রেখে বীজপাত্র বায়ুরোধী করে বন্ধ করে দিতে হবে। এভাবে বীজ পাত্রে বীজ একবছর পর্যন্ত ভালো থাকে। বীজ সংরক্ষণের সাথে সংশ্লিষ্ট আরো কিছু আবশ্যকীয় করণীয় হলো-
ক. বীজ পাত্র মাটির হলে অগণিত অদৃশ্য ছিদ্রের মাধ্যমে বাতাস মাটির বীজপাত্রের ভেতরে ঢুকে বীজের মান নষ্ট করে দেয়। এ জন্য মাটির বীজপাত্র ভালোভাবে লেপে দিতে হবে। বীজপাত্র প্রলেপ দেয়ার জন্য আলকাতরা, গাবের রস, যে কোনো বাজারি রঙ, রান্নার পুরনো তেল, রেড়ি/ভেরে-ার তেল, পাকা বীচিকলার কাথ, কাঁঠালের খোসার কাথ, পাকা বেল এসব দিয়ে মাটির পাত্র লেপে দিয়ে শুকানো বীজ রাখতে হবে। এতে বীজ শতভাগ ভালো এবং বিশুদ্ধ থাকবে।
খ. বীজপাত্রে বীজ যদি কম থাকে তাহলে বিভিন্ন সমস্যা হয়, বীজের মান কমে যায় সেজন্য পারতপক্ষে মুরী, শুকনা পরিষ্কার কাঠের গুঁড়া/ছাই/তুষ দিয়ে বীজপাত্রের খালি অংশ ভরে তারপর বায়ুরোধী করে মুখ বন্ধ করতে হয়। যদি কোনোভাবে বীজপাত্র ভরে দেওয়া সম্ভব না হয় তাহলে খালি জায়গাটিতে একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে আস্তে আস্তে বীজপাত্রের ঢাকনা দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিতে হবে। এতে খালি জায়গার জীবাণু মরে গিয়ে বীজপাত্রের পরিবেশ বালাইমুক্ত রেখে বীজ মানসম্মত থাকে।
গ. বীজপাত্রে বীজ রাখার কাজ শেষ হলে হয় শিকায় ঝুলিয়ে রাখতে হয় অথবা ওজনে ভারী হলে মাচা করে চাটাই, কাঠের ওপর এমনভাবে রাখতে হবে যেন বীজপাত্র মাটির বা ফ্লোরের সংস্পর্শে না লাগে। এতে মাটির আর্দ্রতায় বীজের কোনো ক্ষতি হয় না।
বীজ সংগ্রহ: মাঠ থেকে জমির সবচেয়ে ভালো ফলন সম্পন্ন অংশ বীজের জন্য নির্বাচন করতে হবে। ৮০ শতাংশের উপর পাকলে বীজ কাটার সময় হয়। রোদ্রউজ্জ্বল দিনে ফসল কেটে পরিষ্কার ভালো স্থানে উপযুক্ত উপকরণে মাচা/টেবিল/গাছের গুড়ি/ড্রাম এসবে আড়াই বাড়ি দিলে যে পরিমাণ বীজ আলাদা হয় সেগুলোই ভালো বীজ হিসেবে সংগ্রহ করতে হবে। আড়াই বাড়ির পর যেসব দানা ফসলের কা-ের সাথে লেগে থাকে সেগুলো গরু/মহিষ বা পায়ে মুড়িয়ে আলাদা করে খাওয়ার জন্য রাখা যায়। এরপর ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে, নিখুঁতভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। বীজ শুকানো হলো কিনা তার লাগসই পরীক্ষা হলো দাঁতের মধ্যে দিয়ে চাপ দিলে কটকট আওয়াজ করলে বা ধানের বীজ ডানহাতের বৃদ্ধ ও তর্জনীর মধ্যে দিয়ে কানের কাছে নিয়ে চাপ দিলে কট করে আওয়াজ হয়। এতে বুঝতে হবে ধানের আর্দ্রতা সংরক্ষণের পর্যায়ে এসেছে। তারপর শুকিয়ে ঠা-া করে উপযুক্ত পাত্রে সংরক্ষণ করতে হয়। মোটকথা বীজের জন্য সবকিছু আলাদা বিশেষত্ব অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বীজ উৎপাদন কৌশল: কোনো উর্বর ফসলি জমিতে যদি বীজ ব্যতীত সব উপকরণ পরিমিত পরিমাণ প্রয়োগ করা হয় তাহলে কোনো ফসল পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। আবার অন্যান্য উপকরণ বাদ দিয়েও যদি শুধু বীজ বপন করা হয় তাহলে কিছু না কিছু ফলন আসবেই। এ যাবত আমাদের দেশে সব ফসল মিলিয়ে ১০-১২% মানসম্মত বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করা গেছে। এখনো আমাদের অনেক পথ পেরুতে হবে। সেজন্য মানসম্মত বীজ উৎপাদন কৌশলে অধিকতর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। ফসল উৎপাদন আর বীজ উৎপাদন এক নয়। বীজ উৎপাদনে বিশেষ কিছু সতর্কতা আর কৌশল অবলম্বন করতে হয়। তা না হলে মানসম্মত বীজ উৎপাদন সম্ভব নয়। মানসম্মত বীজ উৎপাদনে যেসব বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে সেগুলো হলো :-
০১. ভালোজাতের মানসম্মত রোগমুক্ত বীজের ব্যবহার;
০২. বীজ বপনের আগে বীজের অঙ্কুরোদগম পরীক্ষা করে নিয়ে বীজের সঠিক মাত্রা নির্ধারণ;
০৩. সময়মতো আদর্শ বীজতলা তৈরি কের বীজ বপন;
০৪. বীজতলার যতœসেবা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা;
০৫. উপযুক্ত বয়সে যতেœর সাথে বীজতলা থেকে চারা উঠানো;
০৬. ভালোভাবে মূলজমি তৈরি করে, সময়মতো রোপণ;
০৭. রোপণের পর যাবতীয় ব্যবস্থাপনা সুনিশ্চিত করা;
০৮. আন্তঃপরিচর্যা নিয়মিত করা;
০৯. চারা রোপণের পর ৪০ দিন পর্যন্ত জমি আগাছামুক্ত রাখা;
১০. সারের উপরিপ্রয়োগ সময়মতো করা;
১১. সুষ্ঠু সেচ ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়ন করা;
১২. সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা অনুসরণ করা;
১৩. স্বতন্ত্রীকরণ দূরত্ব বজায় রাখা (জমি থেকে জমি কমপক্ষে ১ মিটার)
১৪. ফসলের পুরো জীবনকালে কমপক্ষে ৩ বার রগিং (বিজাত) বাছাই করা;
১৫. ফসল ৮০% পাকলে কাটার ব্যবস্থা করা, পুরো জমির মধ্যে সবচেয়ে ভালো অংশ বীজের জন্য নির্বাচন করা;
১৬. রৌদ্রউজ্জ্বল দিনে কাটতে হবে;
১৭. কাটার পর পাকা হোক কিংবা গোবর লেপে হোক অথবা মোটা পলিথিন বিছিয়ে তার ওপর ধান মাড়াই করা। ধান মাড়াই করার ক্ষেত্রে একটি ভালো পদ্ধতি হলো ধানের গোছা নিয়ে আড়াইবাড়ি অর্থাৎ জোরে জোরে ২ বাড়ি এবং আস্তে ১ বারি দিলে যে পরিমাণ ধান পড়বে সেগুলোই মানসম্মত পরিপক্ব বলে গণ্য করা হয়। গোছার বাকি ধান পিটিয়ে বা গরু/মহিষ দিয়ে মাড়িয়ে সংগ্রহ করতে হয়। কিন্তু এগুলো বীজ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যাবে;
১৮. মাড়াইয়ের পর পাকা ফ্লোরে বা গোবর লেপা ফ্লোরে বা পাটি/চাটাই/হোগলা/মোটা পলিথিন দিয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে;
১৯. ভালোভাবে শুকানোর পর ঠা-া করে সংরক্ষণ করতে হবে। বীজের আর্দ্রতা ১০-১২% থাকা দরকার। আর্দ্রতামাপক যন্ত্র দিয়ে আর্দ্রতা মাপা যায় কিন্তু গ্রামীণ পরিবেশে এ সুযোগ নেই। সেজন্য দাঁতের মাঝে দিয়ে কটকট শব্দ করলে বা বৃদ্ধ আঙ্গুল ও তর্জনীর মাঝে ধরে কানের কাছে নিয়ে চাপ দিলে কট করে আওয়াজ হয়। এতে বুঝতে হবে ধান সংরক্ষণ করার উপযোগী হয়েছে;
২০. বীজ ঠা-া হওয়ার পর ভালোভাবে আধুনিক লাগসই পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে হবে। মোটকথা বীজ থেকে বীজ এ পুরো প্রক্রিয়ায় বিশেষ কৌশল পদ্ধতি প্রযুক্তি অনুসরণ করলে মানসম্মত বীজ উৎপাদন সম্ভব। আর তখনই পুরো দেশের অধিক উৎপাদন কৌশলে মানসম্মত বীজ উৎপাদন সরবরাহ নিশ্চিত হবে।
বীজ শুকানোর লাগসই পদ্ধতি: আমাদের দেশের আবহাওয়ার জন্য এমনিতেই ফসল শুকানো কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সে ক্ষেত্রে বীজ শুকানো আরো ঝামেলা এবং ঝুঁকিপূর্ণ। তাছাড়া বিশেষ করে বর্ষাকালে বীজ শুকানোটি জটিল আকার ধারণ করে। এ সমস্যা থেকে সমাধানের জন্য বগুড়ার গ্রামে আবিষ্কার হলো বৃষ্টির দিনে ঘরের বারান্দায় ভেজা জামা কাপড় ঝুলিয়ে দিলে যদি সময়ের ব্যবধানে শুকিয়ে যেতে পারে তাহলে বীজ কেন শুকাবে না। এজন্য তারা প্রমাণ সাইজের একটি টেবিলে বা মাচা তৈরি করে বাঁশ কাঠ সুপারির চালি দিয়ে। এর উপর পাটি/হোগলা/মোটাপলিথিন বিছিয়ে ভেজ ধান বা যে কোনো দানাদার ফসল মেলে রেখে দিতে হবে। ৩০-৪০ মিনিট পরপর উল্টিয়ে দিলে আস্তে আস্তে শুকিয়ে যায়। তাছাড়া টেবিলটি বাইরে রোদে রেখে দিলে কম সময়ে শুকিয়ে যাবে। হঠাৎ বৃষ্টি আসলে ২ জনে ধরে বারান্দায় নিয়ে এলেই চলবে। এ টেবিলটি সময়ে বীজ শুকানো, হাঁড়িপাতিল রাখা, কেরাম বোর্ডের বোর্ড রেখে খেলাসহ বিভিন্ন কাজে লাগানো যায়। কম খরচে অল্প সময়ে ঝুঁকিবিহীন এমন কৌশল আর হতেই পারে না।
বীজ শুকানোর সৌর টেবিল: বেশ ক’দিন আগে বাংলাদেশ-জার্মানি বীজ উন্নয়ন প্রকল্পের টিম লিডার ড. রিচার্ড লাভরিনোভিচ বীজ শুকানোর সৌর টেবিল আবিষ্কার করেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটি খুব উপযোগী এবং কার্যকরী। স্থানীয়ভাবে বাঁশের মাচা বা টেবিল দিয়ে এটি তৈরি করা যায়। টেবিলের আকার নির্ভর করে চাষির চাহিদার ওপর। সাধারণ মাপটি হলো দৈর্ঘ্য ২শ’ ৪৫ সেমি. (৮ ফুট) প্রস্থ ৭৫ সেমি. (২.৫ ফুট) এবং উচ্চতা ৭শ’ ৬০ সেমি. (২৩.৫ ইঞ্চি) একটু ঢালু পেছনের অংশ এবং সামনের অংশ ১শ’ সেমি. (২৯ ইঞ্চি)। এ টেবিল তৈরির বাঁশ/সিআই শিট বা ঢেউটিন/তার বা পাটের দড়ি, প্লাস্টিকের দড়ি/আলকাতরা এসব। টেবিলটি ৬টি পা দিয়ে বর্ণিত আকারের মাচা দিয়ে ঢালু টেবিল তৈরি করতে হয়। মাচার উপর ঢেউটিন বা সিআই শিট বিছিয়ে দিতে হবে। টেবিলের পা ইটের ওপর রাখলে আদ্রতা থেকে বাঁচবে দীর্ঘদিন টিকবে। ব্যবহৃত বাঁশ কাঠে আলকাতরা দিলে দীর্ঘদিন টিকবে। টেবিলটি উপর ছুঁইয়ের মতো করে বাঁশের কঞ্চি স্থাপন করতে হবে যেন পলিথিন লাগাতে সুবিধা হয়। উত্তর দক্ষিণমুখী করে রোদে রাখতে হবে। শিট বা টিনের ওপর ফসল রেখে মেলে দিতে হবে। সাধারণ রোদ, টিনের গরম, পলিথিন দেওয়ার জন্য এক্সটা গরমের কারণে বীজ বা ফসল দ্রুত শুকায়। অনেক সময় আমাদের আবহাওয়ার বিশেষজ্ঞের জন্য মেঘ বৃষ্টি আর রোদের খেলা চলে। এখন এ সৌর টেবিলটি দারুণ কাজে লাগে। কেননা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর গুমোট গরম বীজ শুকাতে দারুন কাজে লাগে। পলিথিনের কারণে বীজ ভিজবে না গুমোট গরমে আস্তে আস্তে অনায়াসে বীজ শুকিয়ে যাবে। কম খরচে এ সৌর টেবিলটি প্রতিটি পরিবার ব্যবহার করে বীজ বা ফসল শুকানোর লাগসই পদ্ধতি প্রযুক্তি হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস